কিস্তির চাপে প্রাণ গেল আজিমুন্নেসার, এনজিও কর্মকর্তার কথাতেই শেষ হলো সব!


সবুজ প্রান্ত ডেস্ক 

রাজধানীর ডেমরায় হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটেছে। ঋণের কিস্তির চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া আজিমুন্নেসা (৫২) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার দুপুরে পূর্ব বক্সনগর হজরত হাজি রোডের একটি তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে স্বামী রাজমিস্ত্রি আব্দুল মজিদ মোল্লা কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পান তিনি। ওই সময়ের মধ্যে আজিমুন্নেসা নিজ ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়েন।

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণের দায়ে প্রতিদিন মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন আজিমুন্নেসা। ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা সহ সাতটি এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ না করায় কর্মকর্তারা প্রায়ই ফোনে ও সরাসরি চাপ দিতেন।

মৃতের স্বামী মজিদ মোল্লা কণ্ঠ রুদ্ধ করে বলেন,
“ব্র্যাকের কিস্তি দিতে দেরি হওয়ায় বৃহস্পতিবার এক কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে বলেন, ‘ঋণ না দিলে মরে গেলেও ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।’ এরপর থেকেই ও গভীর দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।”

তিনি আরও জানান, “প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৩৫ বছর আগে আজিমুন্নেসাকে বিয়ে করি। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়ে আমরা স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাস করতাম। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া অসম্ভব।”

ডেমরা থানার ওসি বলেন, “ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আপাতত একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতরপূর্বতন