সিলেটের কানাইঘাটে বানরের ক্রমবর্ধমান উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছে উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন মসজিদে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর ইমামগণ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ওই চিঠি পড়ে শোনান।
এলাকার যুব সমাজের উদ্যোগে পাঠানো ওই চিঠিতে জানানো হয়, কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার সোনারতালুক, নন্দিরাই, গোসাইনপুর, সোনাপুর, সুতারগ্রাম, গোবিন্দপুর, নিজ গোবিন্দপুর ও মহেশপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বানরের আক্রমণে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩০ থেকে ৪০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়দের ফলমূল ও সবজির বাগান নষ্ট করে বানরগুলো ব্যাপক ক্ষতি করছে বলেও উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। তাতে আরও বলা হয়, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে কোনো বন্য পশু হত্যা নিষিদ্ধ। তাই বানরগুলোকে হত্যা না করে কৌশলে তাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি সকলকে সতর্ক ও সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি পৌরসভার সোনারতালুক গ্রামের আশরাফ সুহেলের চার বছর বয়সী মেয়ে মেহরা ইসলাম বানরের আক্রমণের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়। বানরটি তার ডান চোখের ওপরে কামড় দেয়। আশরাফ সুহেল বলেন, “বানরের যন্ত্রণায় আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। দিনের বেলা ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে থাকতে হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “বানরের আক্রমণ থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পেতে আমরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে শনিবার (১ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি জমা দেবো।”
উল্লেখ্য, কানাইঘাটের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় দুই বছর আগে থেকেই বানরের আনাগোনা দেখা গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের আক্রমণাত্মক আচরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশুদের ওপর বানরের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অভিভাবকরা চরম উদ্বেগে রয়েছেন। ভোরে মক্তবে বা সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় এসব আক্রমণ বেশি ঘটছে। ফলে অনেক শিশু এখন বিদ্যালয় ও মক্তবে যেতে ভয় পাচ্ছে।
এ বিষয়ে কানাইঘাট উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. বিপ্লব হোসেন বলেন, “বন্যপ্রাণী ধরার বা উদ্ধারের জন্য একটি রেসকিউ টিম রয়েছে, তবে সেটি সিলেটে নয়, মৌলভীবাজারে অবস্থিত। যেহেতু বানরগুলো আক্রমণাত্মক আচরণ করছে, তাই স্থানীয় প্রশাসন, বন বিভাগ ও এলাকাবাসীকে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।”
