জকিগঞ্জে জামায়াতের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খানের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

সরকারি ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগে বিতর্ক

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি 


সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ–কানাইঘাট) আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফিজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন খানের উদ্যোগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) এক জনকল্যাণমূলক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পল্লীশ্রী বাজার সংলগ্ন ইমদাদ মজুমদার বিদ্যানিকেতন প্রাঙ্গণে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে এ চিকিৎসা কার্যক্রম। স্থানীয় জনসাধারণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া এই ক্যাম্পে প্রায় পাঁচ শতাধিক রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

এ সময় হাফিজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান বলেন, “অসহায় মানুষ যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়, এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। মানবতার সেবায় এ ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”

চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগী জানান, তারা কোনো ধরনের ফি ছাড়াই চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়েছেন। 

স্থানীয়ভাবে এ উদ্যোগের প্রশংসা করলেও, ক্যাম্পে সরকারি ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “সরকারি ওষুধ ব্যবহার করে ফ্রি ক্যাম্প চালানো হলে সেটি তদন্ত করা দরকার।”

আরেকজন মন্তব্য করেন, “মানবিক সেবার নামে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। যদি সত্যিই সেবা দিতে চান, তবে নিজের অর্থে ওষুধ কিনে দেওয়া উচিত ছিল।”

‘জিহাদ’ নামের একজন লিখেছেন, “সরকারি ওষুধ বিলিয়ে নিজের নামে ক্যাম্প প্রচার করা জালিয়াতি ও প্রতারণার শামিল। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি দেখা।”

অভিযোগ প্রসঙ্গে আয়োজক কমিটির এক সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, “আমাদের মেডিকেল ক্যাম্পে ব্যবহৃত ওষুধ স্থানীয় ফার্মেসি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় সংগ্রহ করা হয়েছে। সরকারি কোনো ওষুধ নেওয়া হয়নি।”

তিনি দাবি করেন, কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।

এদিকে স্থানীয়ভাবে অনেকেই বলেছেন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মতো উদ্যোগ প্রশংসনীয়, তবে সরকারি সম্পদ ব্যবহারের অভিযোগ সত্য হলে তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের জামায়াত মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন লস্কর।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন খান, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম রোকবাণী চৌধুরী জাবেদ, সিলেট জেলা পূর্বের সাবেক শিবির সভাপতি মারুফ আহমেদ রাজু, খলাছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, এবং সুলতানপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি আবু জাফর মোহাম্মদ আফজল।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মুয়াজ্জেম ইসলাম ও ডা. গোলাম কিবরিয়াসহ একদল চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবক সেবা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, হাফিজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, মানবসেবা ও স্থানীয় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত। তবে সরকারি ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত তথ্য প্রকাশের দাবি তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতরপূর্বতন