এক সময় সাদা পাথরের ঝলকানি আর স্বচ্ছ জলের জন্য পরিচিত ভোলাগঞ্জ এখন দখলদারদের করাল গ্রাসে বিপন্ন। দিন কিংবা রাত—নদীর বুক চিরে শত শত নৌকা ভাসছে পাথরের খোঁজে। অবাধ উত্তোলনের দৌরাত্ম্যে বদলে যাচ্ছে প্রকৃতির রূপ, নদীর তলদেশে তৈরি হচ্ছে অগণিত গর্ত, ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে পানি।
স্থানীয়রা জানান, ভোলাগঞ্জ এখন আর আগের মতো নেই। একসময় যেখানে চোখ জুড়ানো সাদা পাথরের সারি দেখা যেত, সেখানে আজ কেবল ঢলের পানি আর উজাড় বালুচর দৃশ্য চোখে পড়ে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন—এভাবে চলতে থাকলে ভোলাগঞ্জ থেকে ‘সাদা পাথরের’ নামই মুছে যাবে।
পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, প্রশাসনের ভূমিকা অনেকটাই ‘কাগজে-কলমে’। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আখতার বলেন,
“এটা শুধু ব্যর্থতা নয়, এখানে কার্যকর কোনো উদ্যোগই নেওয়া হচ্ছে না। সাদা পাথর সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা জরুরি।”
অন্যদিকে সিলেট জেলা প্রশাসক শাহ মাহবুব মুরাদ দাবি করেছেন, নিয়মিত যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে এবং অনেককে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। তবে জনবল সংকট ও নানা সীমাবদ্ধতায় শতভাগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করারও চেষ্টা চলছে।
পরিবেশবিদদের মতে, ভোলাগঞ্জ কেবল একটি পর্যটনকেন্দ্র নয়—এটি সিলেটের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এখনই যদি অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ না হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ‘সাদা পাথরের ভোলাগঞ্জ’ শুধুই ইতিহাসের পাতায় পড়বে।