জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রী ইউনিয়নে শিক্ষা বিস্তারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে লন্ডনপ্রবাসী শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ প্রতিষ্ঠিত ‘হাজী আব্দুল হক ট্রাস্ট’।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টায় ঐতিহ্যবাহী সোনাপুর মাজহারুল উলূম আলিম মাদ্রাসা মিলনায়তনে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ইউনিয়নের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১১ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তি তুলে দেওয়া হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসা, হিফজ বিভাগসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের উপদেষ্টা জসিম উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ট্রাস্টের সচিব ও সোনাপুর মাজহারুল উলূম আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কুতবুল আলম। প্রধান অতিথি ছিলেন বীরশ্রী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম চৌধুরী পানু মিয়া এবং মুখ্য অতিথি ছিলেন সোনাপুর মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা ফজলুর রহমান চৌধুরী (শিঙ্গাইরকুড়ী)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টের যুগ্ম আহ্বায়ক আমান উদ্দিন, বরকতপুর মান্নানীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা খলিলুর রহমান চৌধুরী, ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতার ভাই নূরুল আলম, গোলাপগঞ্জের উত্তর জাঙ্গালহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরুণ কুমার বিশ্বাস, পশ্চিম জামডহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুর আলম, জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাংবাদিক জুবায়ের আহমদ, জামেয়া ইমদাদুল উলুম শিঙ্গাইরকুড়ী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বীরশ্রী কুতুবিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফিজ সৈয়দ জিয়াউর রহমান এবং বিপক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমদাদুর রহমান।
বক্তারা বলেন, সাধারণত শিক্ষা বৃত্তি কার্যক্রম নির্দিষ্ট শ্রেণি বা প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ থাকে। অথচ হাজী আব্দুল হক ট্রাস্টের উদ্যোগে প্রাথমিক, আলিয়া, কওমি ও হিফজ—সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে এনে একযোগে বৃত্তি প্রদান এক অনন্য নজির।
ট্রাস্টের সচিব মাওলানা কুতবুল আলম জানান, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা গ্রেডে প্রথম স্থানপ্রাপ্তরা পেয়েছে সনদপত্রসহ ২,৫০০ টাকা, দ্বিতীয় স্থানপ্রাপ্তরা ২,০০০ টাকা এবং তৃতীয় স্থানপ্রাপ্তরা পেয়েছে ১,৫০০ টাকা। সাধারণ গ্রেডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পেয়েছে সনদপত্রসহ ১,০০০ টাকা করে বৃত্তি।
এ বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় দাখিল মাদ্রাসার ৪র্থ, ৭ম ও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এবং হিফজ বিভাগের ১, ৫, ১০, ২০ ও ৩০ পারা হিফজকারী শিক্ষার্থীরা।
বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, এ মহতী উদ্যোগ জকিগঞ্জ ছাড়িয়ে সিলেট অঞ্চলে শিক্ষার অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, তিনি তাঁর পিতা মরহুম হাজী আব্দুল হকের স্মৃতিকে অম্লান রাখতে যে ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।