জকিগঞ্জে এসএসসি-দাখিল পরীক্ষায় বৈচিত্র্যপূর্ণ ফলাফল

শীর্ষে মৌলভী ছাইর আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও ফুলতলী কামিল মাদ্রাসা
জুবায়ের আহমদ :

২০২৫ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলাফলে এবছরেও বৈচিত্র্য দেখা গেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান ধারাবাহিক ভালো ফল করে শীর্ষে অবস্থান ধরে রেখেছে, আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আশানুরূপ ফল করতে পারেনি।

দাখিল পরীক্ষায় প্রথম বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদ্রাসা

উপজেলার মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফল করেছে বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদ্রাসা। শতাব্দীপ্রাচীন, শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রহ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত এ প্রতিষ্ঠানটির পাসের হার ৯২.৭৭% এবং ৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। ধারাবাহিক ফলাফলের মানোন্নয়ন, অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ এই সাফল্যের প্রধান ভিত্তি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডা. তোফাজ্জল আলী মহিলা দাখিল মাদ্রাসা (৮৬.৬৭%), এরপর নবীগঞ্জ দারুস সুন্নাহ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (৮২.৫০%), বারহাল গাউসিয়া দাখিল মাদ্রাসা (৮০.৯৫%) এবং গঙ্গাজল হাসানিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (৭৯.২৫%)।

জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সোনাপুর মাজহারুল উলূম আলিম মাদ্রাসা, গোটারগ্রাম ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কসকনকপুর গাজীরমোকাম দাখিল মাদ্রাসা ও ইছামতি দারুল উলূম কামিল মাদ্রাসা-র শিক্ষার্থীরা আলোচনায় এসেছে।

অন্যদিকে সবচেয়ে কম ফল করেছে হাজী তৈয়ব আলী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা – মাত্র ৩৬% পাসের হার। পূর্ব ইছামতি দাখিল মাদ্রাসা, রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা, উত্তরকুল মোশাহিদীয়া দাখিল মাদ্রাসা-সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান খুবই হতাশাজনক ফল করেছে।

এসএসসি পরীক্ষায় শীর্ষে মৌলভী ছাইর আলী উচ্চ বিদ্যালয়

জকিগঞ্জ উপজেলার মধ্যে মৌলভী ছাইর আলী উচ্চ বিদ্যালয় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির পাশের হার ৮৮.৮% এবং ৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সীমান্তিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ৭৭.৯২% পাসের হারে ১০ জন জিপিএ-৫ পেয়ে চমক সৃষ্টি করেছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে জকিগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় – ৭৫.২১% (জিপিএ-৫: ৯ জন)।

তালিকায় আরও রয়েছে:

কাজী আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয় – ৭৩.৪৭%

আব্দুর রাজ্জাক স্মৃতি বিদ্যানিকেতন – ৬৯.২৩%

বারহাল এহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় – ৬৮.৪৫%

শাহবাগ স্কুল এন্ড কলেজ – ৬৭.১১% (জিপিএ-৫: ১ জন)

শেরুলবাগ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ – ৬৬.৬৭%

গুরুসদয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ – ৬৫.৮৬%

এম.আর. মজুমদার বিদ্যানিকেতন – ৬৫.২৫% (জিপিএ-৫: ২ জন)

অন্যদিকে আশঙ্কাজনকভাবে পিছিয়ে রয়েছে জকিগঞ্জ বালক উচ্চ বিদ্যালয় (৪৮.৮২%, জিপিএ-৫: ৩) ও ইমদাদ মজুমদার বিদ্যানিকেতন (৪৭.৬৪%, জিপিএ-৫: ২)।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “ভালো ফল করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিনন্দন জানাই। যারা পিছিয়ে রয়েছে, তাদের উন্নয়নে বিশেষ পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।”

শিক্ষাবিদরা মনে করেন, মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরির পাশাপাশি পিছিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানের মানোন্নয়ন ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করলেই সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন