এএসপি জামশেদ আলমকে সিলেটে সংবর্ধনা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ পুলিশের মানবিক কর্মকর্তা, সাহিত্যপ্রেমী ও লেখক ইন্সপেক্টর মো. জামশেদ আলম সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে। সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান তাঁর কাঁধে পদক পরিয়ে দেন।
এই পদোন্নতিতে উচ্ছ্বসিত তাঁর সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও বন্ধু মহল। প্রিয় মানুষটিকে অভিনন্দন জানাতে গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে সিলেট নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজন করা হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক যুগান্তর-এর সিলেট ব্যুরো প্রধান সংগ্রাম সিংহ এবং সঞ্চালনা করেন দৈনিক সংবাদ-এর বিশেষ প্রতিনিধি আকাশ চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর বিএনপির সহসভাপতি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুদীপ সেন বাপ্পু।
তিনি বলেন, “আমরা আজ কোনো পুলিশ কর্মকর্তাকে নয়, একজন মানবিক ও গুণী মানুষকে সম্মান জানাচ্ছি। ছাত্রজীবন থেকেই জামশেদ আলম লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত, আর কর্মজীবনে তিনি থেকেছেন সাধারণ মানুষের পাশে।”
সংবর্ধনার জবাবে জামশেদ আলম বলেন, “সিলেটেই আমার কর্মজীবনের সূচনা। এখানকার মানুষের ভালোবাসায় আমি অভিভূত। মনে হয়, কর্মক্ষেত্রে সিলেট আমার দ্বিতীয় জন্মভূমি। দেশে-বিদেশে, বিশেষ করে লন্ডনে সিলেটিরা আমাকে যে সম্মান দিয়েছে, তা আজীবনের প্রেরণা হয়ে থাকবে। বন্ধু মহলের এই সংবর্ধনা আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক নূরে আলম খোকন, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক জহিরুল ইসলাম, দৈনিক সমবানী সম্পাদক এম. এ. অন্তর হাওলাদার, এনটিভির ক্যামেরাপার্সন আনিস রহমান, বাউল শিল্পী বিরহী কালা মিয়া, ডেইলি স্টার-এর ফটোগ্রাফার শেখ আশরাফুল আলম নাসির, বৈশাখী টিভি-এর প্রতিনিধি এস. সুটন সিংহ, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এস. আলমগীর, আরটিভির প্রতিনিধি হাসান মোহাম্মদ শামীম প্রমুখ।
সাহিত্য ও সাংবাদিকতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে জামশেদ আলমের। ছাত্রজীবনে তিনি কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতেন এবং দৈনিক আজাদী পত্রিকায় কলম সৈনিক হিসেবে কাজ করেন। পুলিশ বিভাগে যোগদানের পরও লেখালেখি থেমে থাকেনি।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া জামশেদ আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ পুলিশে এসআই হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৪ সালে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানা থেকে শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। এরপর হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেটের বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করেন।
২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেন। তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি, সিটি এসবি, কোর্ট, এবং জকিগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষতা ও সততার সঙ্গে।
দীর্ঘ তিন দশকের কর্মজীবনে শৃঙ্খলা, ন্যায়পরায়ণতা ও নিষ্ঠার কারণে পদোন্নতি পেয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার পদে—এমনটাই মনে করছেন সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
