ডিজিটাল প্রতারণার নতুন কৌশল: সরকারি কর্মকর্তা সেজে শিক্ষকদের ফাঁদে ফেলল প্রতারক

সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফুলতলী মাদরাসায় প্রবেশ করে শিক্ষকদের ফাঁদে ফেলেছে এক প্রতারক। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর প্রতিনিধি দাবি করে তিনি শিক্ষকদের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দেন এবং পরে প্রতারণার মাধ্যমে দামী প্রোডাক্টের নামে সাধারণ চাকতি বিক্রি করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসায়।

মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী জানান, ভদ্রবেশী ওই ব্যক্তি প্রথমে পরিচয় দেন বিপিসি থেকে আসা কর্মকর্তা হিসেবে। শিক্ষকদের আস্থা অর্জনের জন্য তিনি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তৃতা দেন এবং পরে একটি বিশেষ চাকতি দেখিয়ে দাবি করেন এটি বিপিসির নিজস্ব প্রোডাক্ট। প্রতারণার অংশ হিসেবে তিনি চাকতিটি মাদরাসায় একটি উপহার দেন এবং আরও কিনতে চাইলে প্রতি পিস ১০০ টাকা দাম নির্ধারণ করেন।

শিক্ষক ও কর্মচারীরা নগদ অর্থ দিয়ে চাকতি কিনলেও পরে দেখা যায় তার ব্যাগে অস্বাভাবিকভাবে অনেক চাকতি মজুত রয়েছে। এতে সন্দেহ হলে তাকে প্রশ্ন করা হয়। তার কাছে ভিজিটিং কার্ড বা সরকারি কাগজপত্র কিছুই ছিল না। শুধু কোমরে ঝোলানো একটি কিউআর কোড সম্বলিত আইডি কার্ড দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

পরবর্তীতে শিক্ষকেরা চাকতিটি সাধারণ চুলায় ব্যবহার করে দেখেন যে এটি সম্পূর্ণ নকল—চাকতি গরম হয়ে যায় এবং লোহার তারগুলো কালো হয়ে পড়ে। পরে তাকে আবার ফিরিয়ে আনা হলে জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন।

স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে পুলিশে না দিয়ে সতর্ক করে পাঠানো হয়। 

তিনি এ ধরনের প্রতারক থেকে সবাইকে সতর্ক করে আরো বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে কেউ এ ধরনের প্রশিক্ষণ বা পণ্য বিক্রি করতে এলে অবশ্যই যথাযথ যাচাই-বাছাই করতে হবে এবং সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে।

সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী বলেন, “আমরা চাই না অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক-কর্মচারী এ ধরনের প্রতারণার শিকার হোক। দয়াময় আল্লাহ আমাদের সকলকে ছদ্মবেশী প্রতারকদের হাত থেকে হেফাজত করুন।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন