অবশেষে নাটকীয় পরিসমাপ্তি: ধর্ষণ মামলা থেকে ডিএনএ প্রমাণ, তারপর বিয়ে!
সিলেটজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া এক মামলার অবশেষে রূপ নিল চমকপ্রদ পরিণতি। যে তরুণী একসময় ধর্ষণের শিকার হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেছিলেন, আদালতে মামলা করেছিলেন, আর পরে জন্ম দিয়েছিলেন এক সন্তানের—অবশেষে তাকেই বিয়ে করতে বাধ্য হলেন অভিযুক্ত ফুফাতো ভাই রিপন মিয়া!
ঘটনাটি যেন নাটকের কাহিনি!
২০২৪ সালের ১ মে। ফেঞ্চুগঞ্জের প্রতিবন্ধী তরুণী কাঁদতে কাঁদতে ফোন করলেন ৯৯৯-এ—“আমাকে আটকে রাখা হয়েছে।” খবর পৌঁছায় থানায়। পুলিশ চেয়ারম্যানসহ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তখন তিনি জানালেন, তিনি ধর্ষণের শিকার এবং অন্তঃসত্ত্বা।
এরপর শুরু হয় আইনি লড়াই। তরুণী নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। অভিযুক্ত হন তার চাচা নুরুল ইসলাম, ফুফা নুর মোহাম্মদ এবং ফুফাতো ভাই রিপন মিয়া।
ডিএনএ পরীক্ষার চাঞ্চল্যকর ফলাফল:
তদন্তভার পায় পিবিআই। ইতিমধ্যেই তরুণী জন্ম দেন এক পুত্রসন্তানের। আদালতের নির্দেশে তিন আসামীর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। আর সেখানেই মেলে নাটকীয় মোড়—শিশুর জেনেটিক মিল পাওয়া যায় একমাত্র রিপন মিয়ার সঙ্গে!
তারপর বিয়ের আসর:
অবশেষে শুক্রবার রাতে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দীনের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় বিয়ে। দেড় লক্ষ টাকা দেনমোহরে এই বিয়ে হয়। বিয়ের পর রিপন মিয়া তরুণী ও তার শিশু সন্তানকে নিয়ে চলে যান মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নিজের বাড়িতে।
অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দীন জানান—“হ্যাঁ, শুক্রবার রাতেই বিয়ে হয়েছে। আমি নিজে উপস্থিত থেকে কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি।”
অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবজাল হোসাইন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “বিয়ের ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তবে শুনেছি শুক্রবার রাতেই এ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।”
আলোড়ন পুরো এলাকায় :
পুরো ঘটনাই এখন এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ধর্ষণ মামলা থেকে আদালতের লড়াই, ডিএনএ প্রমাণ আর শেষে আকস্মিক বিয়ে—সবকিছুই যেন নাটকের প্লট। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই বিয়ের পর আসলেই কি ওই তরুণীর জীবনে শান্তি ফিরবে, নাকি শুরু হবে নতুন সংগ্রামের অধ্যায়?