জকিগঞ্জের বারঠাকুরী আল ফালাহ জামে মসজিদের দীর্ঘ ৪০ বছরের ইমাম মাওলানা আব্দুল কাদিরকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকাল ৩টায় মসজিদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত নয়নে অনুভূতি প্রকাশ করেন গুণী এই আলেম।
বারঠাকুরী আল ফালাহ জামে মসজিদ ও মহল্লাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরের সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার সিরাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জকিগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল খালেক, বারঠাকুরী শিতালঙ্গিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুস সালাম, তালিমুল কুরআন মহিলা একাডেমির পরিচালক ও ইউনিয়ন ইমাম সমিতির সেক্রেটারি মাওলানা হাম্মাদ হোসাইন, মাওলানা ফয়জুর রহমান, সমাজসেবী আখতার হোসেন রাজু, ব্যাংকার আবিদুর রহমান, মসজিদের ইমাম মাওলানা নোমান আহমদ, মাওলানা নাজির আহমদ, মাওলানা মাসুম আহমদ এবং সংগঠক জাহেদ আহমদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব বলেন, “ইমাম সাহেব যখন এই মসজিদে যোগ দেন, তখন সামান্য বেতনে খেদমত শুরু করেছিলেন। আমার শ্রদ্ধেয় পিতা, প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আব্দুর রহিম (রহ.)-এর নির্দেশে তিনি এই মসজিদে আসেন। মানুষের ভালোবাসা, আন্তরিকতা ও দোয়ার ছায়ায় তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর ইমামতি করেছেন। সুখে-দুঃখে এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন, কখনো অভাব-অনটনের কথা প্রকাশ করেননি, বরং পরম করুণাময় আল্লাহর উপর ভরসা রেখেই জীবন অতিবাহিত করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রণী। কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক বিতর্ক তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। এ কারণেই তিনি একটানা ৪০ বছর এক মসজিদে ইমামতির গৌরব অর্জন করেছেন। আমরা গর্বিত, আমরা আজ তাঁকে সম্মানিতভাবে বিদায় জানাতে পারছি।”
অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। পরে এলাকাবাসী কাঁদতে কাঁদতে রাজকীয় বিদায়ের মধ্য দিয়ে মাওলানা আব্দুল কাদিরকে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন।