জকিগঞ্জ প্রতিনিধি:
আধুনিক ও গুণগত শিক্ষা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সিলেটের অন্যতম বিদ্যাপীঠ উইমেন্স মডেল কলেজ। কলেজটির ১২ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এর শিক্ষা কার্যক্রম তুলে ধরতে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় জকিগঞ্জে। শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় জকিগঞ্জ বাজারের সোনার বাংলা কনফারেন্স হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াদুদ তাপাদার। তিনি বলেন, “জকিগঞ্জ আমাদের শিকড়—আশার জায়গা। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমাদের এই যাত্রা ১২ বছরে পা দিয়েছে। আজকের এ আয়োজন শুধু শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য নয়, বরং আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই আমাদের অর্জন ও অঙ্গীকার।”
তিনি জানান, কলেজে বর্তমানে ৪১ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক ও ৬০০-এর অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট শিক্ষাবোর্ডে একাধিকবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে কলেজটি। প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজ ও দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে।
আবাসিক সুবিধা ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, “মফস্বলের মেয়েদের কথা বিবেচনায় আমরা স্বল্প খরচে নিরাপদ বোর্ডিং সুবিধা চালু করেছি। প্রতিমাসে মাত্র ৮-১০ হাজার টাকায় থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন আবাসিক ম্যাডাম থাকেন, যিনি সার্বক্ষণিক তদারকি করেন।”
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের জন্য বাইরে যেতে হয় না। কলেজেই প্রতিদিন বিকেলে দুই ঘণ্টা করে নিয়মিত কোচিং করানো হয়। সেইসঙ্গে ফ্রি কোচিংয়ের ব্যবস্থাও চালু রয়েছে।
প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করে অধ্যক্ষ বলেন, “এই যুগে প্রযুক্তিনির্ভর না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করেছি। প্রতি মাসের শুরুতেই পুরো পাঠ পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যায়। কোন দিন কোন বিষয়ে পাঠদান হবে, সেটাও আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়—ফলে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে অংশ নিতে পারে।”
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা যাচাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের স্বনামধন্য শিক্ষকদের দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়—যাতে জানা যায়, কোন বিষয়ে তাদের দক্ষতা বেশি এবং কোন বিষয়ে বেশি মনোযোগ প্রয়োজন।
সভায় অধ্যক্ষ জকিগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা আমাদের কলেজে আসুন, পরিবেশ দেখুন, শিক্ষার মান যাচাই করুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন আপনার মেয়েকে কোথায় ভর্তি করাবেন।”
মতবিনিময় সভায় জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। সকলেই কলেজটির উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে এমন প্রয়াসকে সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেন।