ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকাল, দেশজুড়ে শোক


দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (৪ মে) রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির। মৃত্যুকালে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেখলাল গ্রামে ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বিএ (অনার্স) ও এমএ সম্পন্ন করার পর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন।

প্রথমে লন্ডনে আইন পেশায় যুক্ত থাকলেও ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। পরে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০২ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পান।

আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতিতেও সরব ছিলেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। তিনি জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দলের হয়ে আইনি লড়াই করেন।

২০১৩ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। পরে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর নতুন রাজনৈতিক দল 'আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি'-তে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সে পদ থেকেও সরে দাঁড়ান।

২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ ১১ বছর প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফেরেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। এরপর আবারও সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জুনিয়র আইনজীবীরা তাকে সম্মাননা দেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে।

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে দেশের আইন অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোক। সহকর্মী, রাজনৈতিক নেতা ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ তার মৃত্যুতে শ্রদ্ধা ও শোক জানিয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন