পদ্মা সেতু চালুর তিন বছর, মোবাইল রিচার্জে এখনো চলছে সারচার্জ


দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি। ভয়েস কল, ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য প্রতিদিনই মোবাইল রিচার্জ করছেন তারা। কিন্তু অনেকেই জানেন না, প্রতিবার রিচার্জের সময় ১০০ টাকায় ১ টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে এখনো পদ্মা সেতু উন্নয়ন তহবিলের নামে।

২০১৬ সালের মার্চ মাসে এই সারচার্জ চালু করেছিল সরকার, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে। তবে ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল আলোচিত ও কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। সেতু চালু হওয়ার পর প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও মোবাইল গ্রাহকদের থেকে এই এক শতাংশ সারচার্জ এখনো আদায় করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মোবাইল অপারেটররা। তারা বলছে, মূল প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পরও গ্রাহকের পকেট থেকে অর্থ কেটে নেওয়ার ন্যায্যতা নেই।

রবির চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, “যে সারচার্জ পদ্মা সেতুর জন্য কালেক্ট করা শুরু হয়েছিল, সেটা এখনো চালু আছে। আমরা মনে করি, এখন এই কর তুলে নেওয়ার সময় এসেছে।”

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য সরাসরি কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবা হতে পারে। যদিও এই খাতে আপাতত কোনো ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা নেই বলেও জানা গেছে।

উল্লেখযোগ্য যে, যমুনা সেতু নির্মাণের সময় বাস, ট্রেন ও সিনেমার টিকিটের ওপর সারচার্জ আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প শেষ হওয়ার পর সেই অতিরিক্ত কর তুলে নেওয়া হয়।

সরকার ইতিমধ্যে মোবাইল রিচার্জ সারচার্জ থেকে আয় করেছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। প্রশ্ন উঠছে—পদ্মা সেতু চালু হওয়ার তিন বছর পরও জনগণের কাছ থেকে কেন এই অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদে জনগণের ওপর এমন অতিরিক্ত আর্থিক চাপ স্বচ্ছতার অভাব তৈরি করতে পারে এবং করব্যবস্থার প্রতি আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন