পিতার হত্যায় অভিযুক্ত কন্যা: পেছনে অশুভ সম্পর্ক ও প্রতিশোধের নেপথ্য কাহিনী


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজধানীর একটি ভাড়া বাসায় ঘটে যাওয়া পিতৃহত্যার মর্মান্তিক ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে তদন্ত। হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত জান্নাত জাহান শিফা নামের এক তরুণী। পিতা আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন তুললেও, পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে এক ভয়াবহ নেপথ্য কাহিনী।

জানা যায়, আব্দুস সাত্তার তার মেয়ে জান্নাতসহ আরও দুটি মেয়েকে নিয়ে এক বাসায় সাবলেট হিসেবে বসবাস করতেন। আব্দুস সাত্তার থাকতেন ডাইনিং রুমে, জান্নাত ও অপর দুই তরুণী পৃথক কক্ষে থাকতেন। অভিযোগ রয়েছে, জান্নাত ও ওই দুই তরুণীর মধ্যে গড়ে ওঠে অনৈতিক সম্পর্ক। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আব্দুস সাত্তার তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং মেয়েকে নৈতিকভাবে সতর্ক করেন।

পুলিশের ভাষ্যমতে, পিতার বাধা ও সতর্কতাকে প্রতিশোধ হিসেবে দেখেন জান্নাত। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত বুধবার রাতে তিনি ভাতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পিতাকে অচেতন করেন। এরপর ভোর ৪টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেন বলে জান্নাত নিজেই স্বীকার করেছেন।

পুলিশ আরও জানায়, হত্যার পর জান্নাত একটি ভিডিও ধারণ করে পিতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন, যাতে জনমত নিজের পক্ষে আনতে পারেন। এমনকি, তাকে সমর্থন করে সামাজিক মাধ্যমে কিছুজন মন্তব্যও করেন—যা তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর প্রমাণিত হয়েছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, “এই ঘটনায় মূলত পিতার নৈতিক অবস্থান ও মেয়ের বিপথগামী আচরণের দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। অভিযুক্ত কন্যা হত্যার কথা স্বীকার করলেও, এটি নিছক আত্মরক্ষার ঘটনা নয় বরং পূর্বপরিকল্পিত প্রতিশোধ।”

এমন ঘটনার প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো ঘটনা পূর্ণাঙ্গ তথ্য ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা যেমন ক্ষতিকর, তেমনি অপরাধীদের পক্ষে আবেগভিত্তিক মন্তব্য সমাজকে বিভ্রান্ত করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত ও আদালতের রায়ই হওয়া উচিত মূল নির্ণায়ক।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন