সিলেট রেলপথ: ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা ও ‘ভাষাহীন’ অবহেলা


সিলেট রেলপথে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা ও স্থানীয়দের প্রতিনিয়তের অভিযোগই প্রমাণ করছে, এই ঝুঁকি শুধুমাত্র দুর্ঘটনার আশঙ্কা নয়, বরং নিয়মিত অভিজ্ঞতা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিলেট রুটে প্রায়শই ব্যবহৃত হয় ৪০-৫০ বছরের পুরনো লকো, যা আর্থিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে প্রায় অপ্রয়োজনীয়ভাবে দুর্বল। নতুন সিরিজের শক্তিশালী ইঞ্জিন আনলেও, সিলেট রুটের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় মান্ধাতা আমলের ২৮ ও ২৯ সিরিজের লকোগুলো।

ছবির এ জীর্ণশীর্ণ ও রোগাক্রান্ত ইঞ্জিনটি হলো পারাবত এক্সপ্রেসের, যা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত। এ রুটের অন্যান্য ট্রেন যেমন উপবন, কালনী ও জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস-ও প্রায় সমান শীতল ও জীর্ণ লকো দিয়ে চালানো হয়। সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস-এর লকোও পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, যে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখোমুখি।

স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, “প্রতিটি ট্রেনে যাত্রা মানে জীবনের ঝুঁকি। নতুন ইঞ্জিন থাকলেও পুরনো লকো থাকায় প্রতিটি যাত্রা ভয়ংকর।”

সিলেট দেশের অন্যতম পর্যটন ও প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রেলসেবায় জাতীয় বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সিলেট রুট প্রায় সর্বদা অবহেলিত।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন লকো ও আধুনিক প্রযুক্তির অভাবই মূল সমস্যা। পাশাপাশি, বেসরকারি ও সরকারি ট্রেন পরিচালনায় যাত্রী নিরাপত্তার মানদণ্ড কমে যাওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে।

সাপ্তাহিক সবুজ প্রান্ত পাঠকদের উদ্দেশ্যে বিশেষ আহ্বান—নিজেদের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য সোচ্চার হই। ভয়াবহ অবস্থা ভেঙে, রেলসেবা নিরাপদ করতে আমাদের এক হয়ে আওয়াজ তুলে ধরি। সিলেটের কল্যাণে এটি একটি জাতীয় দাবি হওয়া উচিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতরপূর্বতন