সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির সুখবর আসছে আগামী বাজেটে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকেই ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাবেন ১৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা, আর ১০ম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মীরা পাবেন ২০ শতাংশ হারে ভাতা। নতুন এই হার ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মূল্যস্ফীতির চাপে বিপর্যস্ত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা এক ধরনের স্বস্তির প্রতীক হয়ে এসেছে। গত বছরের ডিসেম্বরেই গঠিত হয় একটি বিশেষ কমিটি, যারা পর্যালোচনা করে প্রস্তাব দেয় নিম্ন গ্রেডের কর্মীদের জন্য বেশি হারে ভাতা কার্যকর করার।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্টের পাশাপাশি পাচ্ছেন ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চালু হওয়া ৫% বিশেষ প্রণোদনা। তবে মহার্ঘ ভাতা কার্যকর হওয়ার পর এই বিশেষ প্রণোদনা বাতিল হবে। অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীরা পাবেন বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও নতুন হার অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা—কিন্তু আর আলাদা করে প্রণোদনা থাকবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই মহার্ঘ ভাতা কার্যকর করতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে বেতন-ভাতা বাবদ মোট বরাদ্দ ৮২ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মচারীরা বারবার অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পদোন্নতির বৈষম্য এবং বঞ্চনার। আগের সরকারের আমলে অবসরপ্রাপ্ত ও পদোন্নতিবঞ্চিত ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে ৭৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দিতে হয়েছে। এমন পটভূমিতে নতুন মহার্ঘ ভাতা অনেকের কাছে আংশিক ন্যায়বিচার হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন, মহার্ঘ ভাতা নিয়ে একটি কমিটি কাজ করছে এবং বাজেটে এটি রাখার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় রয়েছে। যদিও শুরুতে কিছু অর্থনীতিবিদ ব্যয়বৃদ্ধির আশঙ্কায় আপত্তি তুলেছিলেন, বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টি এখন ব্যয় নয়, বরং বিনিয়োগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।