নিজস্ব প্রতিবেদক :
জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের অফিস সম্পাদক, তরুণ সমাজকর্মী ও শিক্ষক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে এক সাহসী প্রস্তাবনা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক খোলা চিঠিতে দাবি করেন—মাত্র তিন মাসের বাস্তব পদক্ষেপেই ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।
চিঠিতে কামরুজ্জামান বলেন, “স্যার, একটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবেন? আপনি যদি দৃঢ়চেতা হন, তাহলে আমি বলছি—মাত্র তিন মাসের মধ্যে দেশের বেকার সমস্যা সমাধান সম্ভব।” তিনি আরও জানান, “যদি বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ৮,২০০ টাকার বেতনস্কেলের সরকারি চাকরির জন্য আর কেউ ২০ লাখ টাকা ঘুষ দেবে না, এমনকি সরকারি চাকরির পেছনে ছুটব না আমিও।”
প্রস্তাবিত সংস্কার: ইউরোপীয় মডেলের শ্রম আইন
কামরুজ্জামান তার প্রস্তাবে বলেন, দেশের প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর জন্য একটি জনশক্তি বিধিমালা প্রণয়ন করা সময়ের দাবি। ইউরোপীয় মডেলের আদলে শ্রমিক ছাঁটাই বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি:
তিন মাস পূর্বে নোটিশ ছাড়া কোনো কর্মীকে ছাঁটাই না করা।
কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে তিন মাসের পূর্ণ বেতন ও ছয় মাসের অর্ধেক বেতন নিশ্চিত করা।
তার মতে, এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে তরুণরা আর সরকারি চাকরির দিকে ঝুঁকবে না, বরং বেসরকারি খাতেই গড়ে উঠবে কর্মসংস্থানের প্রধান ভরকেন্দ্র।
‘যদি-কিন্তু-তবে নয়, চাই দৃঢ় পদক্ষেপ’
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়ে কামরুজ্জামান বলেন, “আপনার হাতে ইউরোপীয় শ্রম আইনের মতো শক্তিশালী একটি হাতিয়ার আছে। এখন প্রয়োজন শুধু তা প্রয়োগের সাহস।”
তিনি উল্লেখ করেন, “সরকারি চাকরিতে মাত্র ৫ শতাংশ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়। বাকি ৯৫ শতাংশই নির্ভরশীল প্রাইভেট কোম্পানির ওপর। তাই প্রাইভেট খাতকে নীতিমালার আওতায় আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।”
গ্রামীণ ফোন ও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শুরু করার আহ্বান : কামরুজ্জামান তার খোলা চিঠিতে গ্রামীণ ফোন ও গ্রামীণ ব্যাংকে ইউরোপীয় মানদণ্ডে জনশক্তি ব্যবস্থাপনার পাইলট প্রকল্প চালুর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আপনি নিজেই যদি একটি উদাহরণ স্থাপন করতে পারেন, তাহলে দেশের অন্য প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর পক্ষে তা উপেক্ষা করা কঠিন হবে।”
তার ভাষায়, “মানুষ নগদ অর্থ নয়, নিরাপত্তা চায়। আর সেই কর্মনিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারলেই বদলে যাবে তরুণ সমাজের কর্মভাবনা।”
চূড়ান্ত আহ্বান: নেতৃত্ব দিন একটি বদলের পথে :
মোহাম্মদ কামরুজ্জামান চিঠির শেষাংশে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে লেখেন, “আপনি জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনপুষ্ট। আপনার হাতে নীতিগত শক্তি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা—তাহলে কেন আপনি পারবেন না? বললেই হবে না, এবার নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।”