নিজস্ব প্রতিবেদক ::
জকিগঞ্জ উপজেলার বাবুরবাজার পশ্চিমবন্দ (মোকাম বাড়ি) এলাকার উদীয়মান তরুণ ফাহিম আহমেদ (২২)-এর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় শোক ও স্তব্ধতা নেমে এসেছে পুরো এলাকায়। বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে সিলেট নগরীর কাজীটুলা লোহারপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ফাহিম আহমেদ উক্ত বাসার ভেতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলেন। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং তদন্ত শুরু করে।
পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, “প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হলেও বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেই ফাহিম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন, যেখানে তিনি লেখেন, “সব মিলিয়ে আমি শেষ, কষ্ট সহ্য করতে পারছি নাই।” তার এই স্ট্যাটাস ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে আলোড়ন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফাহিম বাবুরবাজার পশ্চিমবন্দ এলাকার কবির আহমেদের বড় ছেলে ও মাস্টার জামাল আহমেদের ভাতিজা। তিনি জোবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রায় পাঁচ-ছয় মাস ধরে তিনি সিলেট শহরের কাজীটুলা লোহারপাড়া এলাকায় একটি মেসে অবস্থান করছিলেন এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পানি উন্নয়ন শাখায় চাকরি করতেন।
প্রতিক্রিয়ায় তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহপাঠী বলেন, “ফাহিম কখনো কোনো সমস্যার কথা খোলাখুলি বলতো না। ওর ভেতরে হয়তো অনেক কষ্ট ছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি।”
অপরদিকে স্থানীয় একজন মুরব্বি বলেন, “ছেলেটি ভদ্র, নম্র ও পরিশ্রমী ছিল। এমন করুণ পরিণতি মেনে নেওয়া কষ্টকর। সমাজে আজ আমাদের তরুণরা কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, তা বোঝা দায়।”
তার মৃত্যুর খবরে নিজ গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীসহ সর্বস্তরের মানুষ তার বাসায় ভিড় করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, তরুণ বয়সে এমন রহস্যজনক মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের জন্যই একটি দুঃখজনক বার্তা বহন করে।
ফাহিমের আকস্মিক প্রস্থান যেন প্রশ্ন রেখে গেল—এই প্রজন্মের অব্যক্ত যন্ত্রণাগুলোর দায়ভার আসলে কার?