শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল মহান ভাষা শহীদদের প্রতি প্রথম প্রহরেই শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত পাবলিক লাইব্রেরী প্রাঙ্গনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। ইতিমধ্যে পুরো শহীদ মিনার ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। এখন শুধু শ্রদ্ধা নিবেদনের পালা। উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনারেও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জানা গেছে রাত ১২ টা ১ মিনিটে জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ২১ শে ফেব্রুয়ারী সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে পায়ে হেটে প্রভাত ফেরী নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। পরে সকাল ১০ টা থেকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান। সেই মাতৃভাষার আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বীকৃতি কিন্তু খুব পুরনো দিনের কথা নয়। ঐতিহাসিক ২১ ফেব্রুয়ারি, সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। এই দিনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের স্বপ্ন, তার জন্ম এবং ঐতিহ্যের। কিন্তু সেই ইতিহাসে রয়েছে আত্মত্যাগ, নিরলস সংগ্রাম এবং হার না মানা মনোভাব। পশ্চিম পাকিস্তানে উর্দু প্রধান ভাষা হলেও পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে হল বাংলা।
ক্ষমতাসীন পাকিস্তান সরকার উর্দু ঘেষা, তাই পূর্ব পাকিস্তানের উপর শুরু থেকেই রুষ্ট। বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দিতে হবে— এই দাবি থেকে পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।
১৯৫২ সালে আজকের দিনে আন্দোলনরত ছাত্র ও সমাজ কর্মীদের উপর বর্বর পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে রফিক, সালাম, আব্দুল জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত-সহ অনেক তরুণ শহিদ হন। এই দিনটি তাই ভাষা শহিদ দিবস হিসেবেও পরিচিত। এরপর পদ্মার উপর অনেক জল বয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের অক্লান্ত লড়াই ও আত্মত্যাগের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, যে দেশের ভিত্তি ছিল বাংলা ভাষা। ইতিহাসের পাতায় শুধু ভাষার জন্য আন্দোলন এবং নতুন দেশের জন্ম এর দ্বিতীয় কোনও উদাহরণ পাওয়া অসম্ভব।
বিষয়
অমর একুশে