উত্তর ঝলমে গ্রাম আদালত সচেতনতা কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া


মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম উত্তর ইউনিয়নের রাজাপুর বাজারে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) মাগরিবের নামাজের পর গ্রাম আদালত বিষয়ক সচেতনতামূলক কার্যক্রম হিসেবে ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সমন্বয়কারী জুবায়ের আহমদের সঞ্চালনায় এ আয়োজন শুরু হয়।

প্রদর্শনীর শুরুতে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ঝলম উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশীষ কুমার আচার্য। তিনি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নিকটতম আদালত হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদে গঠিত গ্রাম আদালতের কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, “ছোটখাটো বিরোধ ও মামলা-মোকদ্দমা আর থানা বা কোর্টে নয়, ইউনিয়ন পর্যায়েই অল্প খরচে ও দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি করা সম্ভব।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার ইকবাল হোসেন, নাঙ্গলকোট উপজেলার ইউসি নূরুল আহাদ এবং লাকসামের ইউসি ফারহাদ হোসেন।

প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী নাটকটি দেখতে স্থানীয় নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরীসহ শতাধিক মানুষ ভিড় জমান। নাটকে গ্রাম আদালতের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা তুলে ধরা হলে উপস্থিত জনতা গভীর মনোযোগের সঙ্গে তা উপভোগ করেন।

কুইজে উচ্ছ্বাস, পুরস্কারে আনন্দ

নাটক শেষে গ্রাম আদালত বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা দারুণ আগ্রহ নিয়ে প্রশ্নোত্তরে অংশ নেন। সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্যে থেকে ১০ জনকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।

কুইজে বিজয়ী দৈয়ারা গ্রামের কলেজছাত্র আরিফ আহমদ বলেন, “আমি আগে জানতাম না ইউনিয়ন পরিষদে ছোটখাটো বিরোধ মীমাংসা হয়। আজকের নাটক ও কুইজে অংশ নিয়ে বিষয়টা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারলাম।”

আরেক বিজয়ী গৃহিণী জাহানারা বেগম জানান, “আমরা মেয়েরা সাধারণত মামলা-কোর্টের ঝামেলায় যেতে চাই না। এখন বুঝলাম, ইউনিয়ন পরিষদেই আমাদের সমস্যার সমাধান করা যায়।”

সাধারণ মানুষের মতামত

নাটক শেষে স্থানীয় প্রবীণ আব্দুস সালাম বলেন, “এই ধরনের আয়োজন আরও বেশি হওয়া দরকার। গ্রাম আদালত নিয়ে মানুষের অনেক অজ্ঞতা আছে। নাটক আর কুইজের মাধ্যমে সহজভাবে বোঝানো হলে সবাই উপকৃত হবে।”

উপজেলা সমন্বয়কারী জুবায়ের আহমদ জানান, গ্রাম আদালত সচেতনতা বাড়াতে ইউনিয়ন পর্যায়ে এ ধরনের কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলবে। তিনি বলেন, “মানুষ যদি গ্রাম আদালতের সুবিধা সম্পর্কে জানে, তবে মামলা মোকদ্দমার চাপ কমবে এবং ন্যায়বিচার সহজলভ্য হবে।”

পুরো আয়োজন জুড়ে রাজাপুর বাজার যেন উৎসবমুখর পরিবেশে পরিণত হয়। নাটক, আলোচনা ও কুইজে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষ যেমন জ্ঞান অর্জন করেছেন, তেমনি পুরস্কার ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে সচেতনতার আনন্দও ভাগাভাগি করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতরপূর্বতন